প্রথমেই একটি বিষয় সকলের মনে রাখা উচিত, “কোনো কাজই ছোট নয়, প্রত্যেক কাজের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা আবশ্যক।” যারা এই নীতিটি মেনে চলতে পারেন, তারা পোস্টটি পড়তে পারেন।
যদি কেউ ব্যবসা করার পরিকল্পনা করেন, তাহলে প্রথমেই যে বিষয়টি তার মনে আসে তা হলো মূলধন। আমাদের মধ্যে অনেকের ধারণা, ব্যবসা শুরু করতে প্রচুর মূলধনের প্রয়োজন হয় প্রাথমিক পর্যায়ে। তবে এই ধারণাটি সম্পূর্ণ সঠিক নয়। কারণ, স্বল্প বিনিয়োগেও ব্যবসা করা সম্ভব। আজ আমরা ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করব।
হ্যাঁ, মাত্র ১০ হাজার টাকায় ব্যবসা করা সম্ভব এবং এই আর্টিকেলে এমন সব ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করা হবে। হয়তো এখানে উল্লেখিত ব্যবসার আইডিয়া গুলোর মধ্যে থেকে কিছু আপনারও পছন্দ হতে পারে।
আপনার ব্যবসা পরিচালনার যাত্রা শুরু করার জন্য এটি একটি উপযুক্ত সময়। তাই ১০ হাজার টাকায় ব্যবসার আইডিয়ার বিস্তারিত জানার জন্য সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য সময় নিন।
প্রতিবারের মতো, শুরু করার আগে আজকের বিষয়ের প্রেক্ষিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উল্লেখ করা প্রয়োজন। ১০ হাজার টাকায় ব্যবসা শুরু করা সম্ভব, তবে সময়ের সাথে সাথে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ানো অপরিহার্য।
ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রয়োজন একটি দৃঢ় মনোভাব, সুসংগঠিত পরিকল্পনা এবং অন্যদের থেকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করার ক্ষমতা। একটি ব্যবসা চালানো সহজ কাজ নয়; এর জন্য ধৈর্য এবং মানসিক শ্রমের মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে হয়। আরও জানুন কিভাবে বিনা পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
যেহেতু আপনি ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে আগ্রহী, তাই আমি ধরে নিচ্ছি যে আপনি ব্যবসা পরিচালনার জন্য যথেষ্ট উদ্যোগী। আপনার সফলতার জন্য শুভকামনা জানিয়ে আমি শেয়ার করছি এমন কিছু ব্যবসার আইডিয়া, যা ১০ হাজার টাকার মধ্যে শুরু করা সম্ভব এবং যা আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে কোন ব্যবসাটি শুরু করার জন্য আপনি প্রস্তুত।
এখন আসুন আলোচনা শুরু করি – ১০ হাজার টাকায় ২৫টি ব্যবসার আইডিয়া। 4K Photo Editor Online For Everyone
অনলাইন ভিত্তিক ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া
সকল ব্যবসাকে চাহিদা ও প্রয়োজনের সুবিধার্থে ২টি শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়েছে, যার একটি হলো অনলাইন ভিত্তিক কার্যক্রম। এই ধরনের ব্যবসার জন্য বাস্তবিকভাবে কোনো দোকান বা অন্যান্য স্থাপনার প্রয়োজন নেই। বরং, অনলাইনের মাধ্যমে এসব ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব। এই ধরনের ব্যবসাগুলি হলো:
১। অনলাইনে বাংলা বই বিক্রির সুযোগ
স্কুল ও কলেজের আশেপাশে অনেক বইয়ের দোকান রয়েছে, যেখানে লক্ষ লক্ষ টাকার বই পাওয়া যায়। তবে বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে বই কেনার সুবিধা ব্যাপকভাবে গ্রহণ করা হচ্ছে। এই সুযোগটি আপনি অনলাইনে বাংলা বই বিক্রির মাধ্যমে গ্রহণ করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, রকমারি.কম এর দিকে নজর দিন, যাদের মূল কার্যক্রম হলো অনলাইনে বই বিক্রি করা।
বইপ্রেমীদের জন্য দারুণ সব বাংলা বইয়ের সংগ্রহ রাখতে পারেন অথবা প্রি-অর্ডার গ্রহণ করে আপনার নির্দিষ্ট সোর্স থেকে বইটি ডেলিভারি দিতে পারেন। যেহেতু এটি একটি অনলাইন কার্যক্রম, তাই পরোক্ষ খরচগুলো এড়ানো সম্ভব হবে, ফলে ১০ হাজার টাকার মধ্যে ব্যবসা পরিচালনা করা সহজ হবে।ঘরে বসে বিনা পুঁজিতে ব্যবসা শুরু করার বিস্তারিত পদ্ধতি জানুন।
২। অনলাইন মার্কেটপ্লেসে পণ্য বিক্রির সুযোগ
আপনি অনলাইন মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে আপনার পণ্য বিক্রি করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে ফেসবুক, অনলাইন শপ ইত্যাদি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা যেতে পারে। সীমিত পরিমাণে পণ্য, প্রি অর্ডার গ্রহণ এবং মৌলিক রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকার মধ্যে এই ব্যবসা শুরু করা সম্ভব।
৩। অনলাইন শিক্ষকতা
করোনার প্রভাবের পর আমরা লক্ষ্য করেছি যে শিক্ষার্থীরা অনলাইন শিক্ষার প্রতি ব্যাপকভাবে আকৃষ্ট হয়েছে। বর্তমান সময়ে অনলাইন শিক্ষা প্রদান একটি স্মার্ট ব্যবসায়িক ধারণা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে (যদিও শিক্ষকতাকে ব্যবসা বলা ঠিক নয়, এটি একটি অনলাইন সেবা হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে)।
যদি আপনি কোনো বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে থাকেন, তবে সেই বিষয়ে শিখতে আগ্রহী শিক্ষার্থীর সংখ্যা মোটেও কম নয়। ঘরে বসে দেশের যেকোনো প্রান্তের শিক্ষার্থীদেরকে অনলাইনে শিক্ষা প্রদান করা সম্ভব। অনলাইনে আয় করার উপায় সম্পর্কে জানুন এবং স্বল্প পুঁজিতে ব্যবসা শুরু করুন।
এই কাজের জন্য ভিডিও কনফারেন্সের মৌলিক উপকরণের বাইরে বিশেষ কোনো খরচ নেই। তাই ১০ হাজার টাকায় আপনি ভালোভাবে অনলাইন শিক্ষকতা করতে সক্ষম হবেন।
৪। ইউটিউব চ্যানেল
অনলাইনে তথ্য অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে প্রথমে গুগল এবং পরে ইউটিউবের দিকে ঝুঁকছে মানুষ। প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্যের সাথে ইউটিউবের পরিধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে ইউটিউবে এমন অনেক বিষয় রয়েছে যা আগে কখনো দেখা যায়নি। ইউটিউব ভিডিওর মাধ্যমে গুগলের বিজ্ঞাপন দেখিয়ে চ্যানেল নির্মাতাদের জন্য আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
আপনি যেকোনো বিষয় নিয়ে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে সহজেই আয় করতে পারেন। এই প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ করতে ১০ হাজার টাকারও কম খরচ হতে পারে।
৫। বিদেশী ভাষা শিক্ষা
২০১৯ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রবাসী বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় ১২,৫০,০০,০০০+ জন। এই সকল ব্যক্তিকে তাদের মাতৃভাষার পাশাপাশি বিদেশী ভাষা শিখতে হয়েছে। মানুষের বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং এর সাথে সাথে বিদেশী ভাষা শিখতে ইচ্ছুক মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।
যদি আপনি বাংলার পাশাপাশি অন্য কোনো দেশের ভাষায় দক্ষ হন, তাহলে আপনি অনলাইন বা অফলাইন মাধ্যমে ভাষা শিক্ষা প্রদান করে আয় করতে পারেন।
৬। অনলাইনে হস্তশিল্প পণ্য বিক্রয়
হাতের তৈরি ঘর সাজানোর পণ্যের ব্যবসা আমাদের দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়। বর্তমানে অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা রয়েছেন যারা হস্তশিল্পের পণ্য অনলাইনে এবং অফলাইন উভয় মাধ্যমেই বিক্রি করছেন। স্বল্প পুঁজির গ্রামীণ ব্যবসার ধারণাগুলোর মধ্যে এটি একটি উল্লেখযোগ্য। মাত্র ১০ হাজার টাকায় এই ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব।
৭। অনলাইন বেকারি
এটি বিশেষভাবে তাদের জন্য উপযোগী যারা “বাড়িতে বসে ব্যবসার ধারণা” সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। যদি আপনি বিভিন্ন ধরনের কেক, কুকিজ এবং ডেজার্ট তৈরি করতে পারেন এবং সেগুলি করতে ভালোবাসেন, তবে এই কাজের মাধ্যমে অনলাইনে একটি ভালো আয় অর্জন করা সম্ভব।
বর্তমানে অনেক বেকারি থাকলেও, মানুষ হোম-মেড কেক এবং কুকিজ কেনার প্রতি আগ্রহী। কারণ এগুলি স্বাস্থ্যসম্মত। ফেসবুক গ্রুপ, পেজ এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সহজেই এই ব্যবসা পরিচালনা করা যেতে পারে।
অফলাইন ভিত্তিক ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া
উপরোক্ত ব্যবসাগুলি অনলাইনে পরিচালনা করা সম্ভব। তবে যদি আপনি এমন ব্যবসা করতে চান যা দৃশ্যমান এবং অফলাইনে পরিচালিত হয়, তাহলে নিচে উল্লেখিত ব্যবসার ধারণাগুলি আপনার জন্য উপযুক্ত। এখানে ১০ হাজার টাকায় শুরু করা যায় এমন বিভিন্ন ধারণা প্রদান করা হয়েছে।
১। মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কেন্দ্র
মোবাইল ফোনের ব্যবহার প্রতিদিন বাড়ছে, এবং এর সাথে সাথে নতুন নতুন মোবাইল ফোন বাজারে আসছে। পুরাতন ফোনগুলোর সমস্যার সমাধানের জন্য সার্ভিসিং কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের প্রতিটি বাজারে মোবাইল ফোন সম্পর্কিত সার্ভিসিং কেন্দ্র পাওয়া যায়। আপনি যদি মোবাইল সার্ভিসিংয়ের বিভিন্ন দিক শিখে নেন, তবে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। সার্ভিসিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ করতে ১০ হাজার টাকার মধ্যে খরচ হবে।
২। চায়ের দোকান
যদি আপনার নাক ছিটকানোর অভ্যাস না থাকে এবং আপনি অল্প সময়ের মধ্যে লাভজনক ব্যবসা করতে চান, যেখানে পুঁজি প্রয়োজন খুব কম, তাহলে চায়ের দোকান আপনার জন্য একটি উৎকৃষ্ট বিকল্প হতে পারে।
চায়ের দোকান নামের কারণে কেবল চা বিক্রি করার ধারণা থাকা উচিত নয়। আপনি চায়ের পাশাপাশি বিভিন্ন খাবারের আইটেমও বিক্রি করতে পারেন। স্থানীয় জনবহুল এলাকায়, যেখানে মানুষের সমাগম ঘটে, সেখানে চায়ের দোকান খোলা অত্যন্ত লাভজনক হতে পারে।
৩। মোবাইল রিচার্জের দোকান
বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে মোবাইল ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা সবসময়ই জনপ্রিয় এবং লাভজনক। ১০ হাজার টাকার মতো মূলধন নিয়ে এই ব্যবসা শুরু করা সম্ভব।
এই ব্যবসার জন্য আপনার কিছু বাটন মোবাইল এবং সিমে লোড করার জন্য ব্যালেন্সের প্রয়োজন হবে। প্রাথমিকভাবে অল্প পরিমাণ টাকা লোড করে শুরু করতে পারেন এবং যখন তা শেষ হয়ে যাবে, তখন আবার লোড করার ব্যবস্থা করতে হবে। এই ব্যবসা পরিচালনার জন্য সিম কোম্পানির SR দের সাথে যোগাযোগ করতে হয়। ডিজিটাল প্রোডাক্ট এর মাধ্যমে কিভাবে কম পুঁজিতে ব্যবসা শুরু করা যায় তা শিখুন।
এছাড়াও, বিকাশ এজেন্ট হিসেবে কাজ করেও ভালো আয় করা সম্ভব। আপনি যদি বুদ্ধিমান হন, তবে এর পাশাপাশি অন্যান্য ব্যবসাও শুরু করতে পারেন।
৪। মিনারেল ওয়াটারের ব্যবসা
আমাদের চারপাশে বিভিন্ন দোকানে নজর দিলে দেখা যায়, ছোট-বড় ফিল্টারের উপরে বড় পানির বোতল স্থাপন করা হয়েছে। এই বোতলগুলো থেকে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করে একটি ব্যবসায়ী গোষ্ঠী, যারা বিভিন্ন ফিল্টারিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পানিকে বিশুদ্ধ করে থাকে।
ঢাকা এবং এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে মিনারেল পানির জন্য ব্যাপক চাহিদা বিদ্যমান। যদি আপনি শুরুতে অল্প পরিমাণে হলেও পানি সংক্রান্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করতে পারেন, তবে ভবিষ্যতে এটি থেকে ভালো আয়ের সম্ভাবনা তৈরি হবে।
যেসব অঞ্চলে মিনারেল পানির অভাব রয়েছে, সেখানে আপনি দোকানের পাশাপাশি বাড়িতে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করতে পারেন।
৫। বিবাহ পরিকল্পনাকারী
বর্তমানে সকলেই তাদের বিবাহের অনুষ্ঠানকে এমনভাবে আয়োজন করতে চান যা চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকে। এজন্য বিবাহের অনুষ্ঠানকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য অনেকেই বিবাহ পরিকল্পনা সংস্থার সাহায্য নিচ্ছেন।
এটি কেবল বিবাহের জন্য নয়, জন্মদিন থেকে শুরু করে অফিসিয়াল যেকোনো অনুষ্ঠানের জন্য ইভেন্ট ব্যবস্থাপনার দায়িত্বও গ্রহণ করে থাকে। আপনি এই ব্যবসার মাধ্যমে একটি লাভজনক খাত গড়ে তুলতে পারেন।
৬। নাচ, গান বা চিত্রকলা শিক্ষা কেন্দ্র
যদি আপনি সাংস্কৃতিক কোনো একটি ক্ষেত্রে দক্ষ হয়ে থাকেন, তবে সেটি অন্যদের শেখানোর মাধ্যমে আয় করতে পারেন। মানুষ নাচ, গান বা শিল্পকলায় শিক্ষা নিতে আগ্রহী। এই উদ্দেশ্যে শেখানোর জন্য প্রয়োজনীয় স্থান এবং মৌলিক উপকরণ সংগ্রহ করতে ১০ হাজার টাকার মধ্যে সম্ভব।
৭। মেকআপ আর্টিস্ট
এটি বিশেষভাবে মেয়েদের জন্য। যারা মেকআপ সংক্রান্ত কাজ দক্ষতার সাথে করতে পারেন এবং এই ক্ষেত্রে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে, তারা উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করে মেকআপ সেবা প্রদান করে আয় করতে পারেন। এছাড়া বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠান বা অন্যান্য ইভেন্টে মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করে আয় করার সুযোগ রয়েছে।
যদিও কসমেটিক্সের মূল্য অনেক বেশি, তবুও মৌলিক উপকরণ দিয়ে শুরু করলে ১০ হাজার টাকায় ভালোভাবে কাজ চালানো সম্ভব।
৮। দর্জির দোকান
সার্ভিস সংক্রান্ত কাজের মধ্যে দর্জির দোকান সর্বদা জনপ্রিয় এবং লাভজনক একটি ব্যবসা। যদি আপনি সেলাইয়ের কাজ জানেন, তবে এই ব্যবসায় বিনিয়োগ করা উচিত। প্রায় ১০ হাজার টাকায় মেশিনসহ সমস্ত প্রয়োজনীয় উপকরণ কেনার খরচ হবে। প্রথমে কিছুটা চ্যালেঞ্জিং মনে হতে পারে, তবে সময়ের সাথে সাথে এই ব্যবসা থেকে ভালো আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
৯। ট্যুর গাইড
ট্যুর গাইডের পেশা তখনই শুরু করা সম্ভব যখন আপনার এলাকা একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। যদি এমনটি ঘটে, তবে আপনার অঞ্চলে ভ্রমণকারী পর্যটকদের জন্য থাকার, খাওয়ার এবং দর্শনীয় স্থানগুলোতে যাওয়ার ব্যবস্থা করে একটি ভালো আয় অর্জন করতে পারেন। এতে খরচের পরিমাণ খুবই কম হয়, কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পর্যটকরা আপনার পেমেন্ট আগে থেকেই করে রাখেন।
১০। ট্রাভেল এজেন্সি
বাস, ট্রেন বা প্লেনের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে ভ্রমণের ব্যবস্থা করার জন্য যে প্রতিষ্ঠান গঠন করা হয়, সেটিকে ট্রাভেল এজেন্সি বলা হয়। এই ধরনের এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করতে খুব বেশি খরচ হয় না, ফলে এটি একটি জনপ্রিয় ব্যবসার মডেল হিসেবে বিবেচিত।
১১। ডে কেয়ার সেন্টার
ডে কেয়ার সেন্টার একটি নিরাপদ ব্যবসায়িক উদ্যোগ। যদি আপনি শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসেন এবং তাদের যত্ন নিতে আগ্রহী হন, তাহলে এটি আপনার জন্য একটি লাভজনক সুযোগ হতে পারে।
বর্তমানে অনেক অভিভাবক রয়েছেন যারা চাকরির কারণে তাদের সন্তানদের সঠিকভাবে দেখাশোনা করতে পারেন না। তারা সবসময় একটি মানসম্মত ডে কেয়ার সেন্টার খুঁজছেন, যেখানে তারা তাদের সন্তানকে পুরো দিন নিরাপদে রেখে যেতে পারবেন। আপনি এই ব্যবসায়ে প্রবেশ করতে পারেন।
১২। খাবারের হোম ডেলিভারি / টিফিন সার্ভিস
যেসব শিক্ষার্থী এককভাবে বসবাস করে বা যেসব কর্মজীবী নিজেদের পরিবার থেকে দূরে অবস্থান করছেন, তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করে ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব। এই ক্ষেত্রে দুটি সুযোগ বিদ্যমান।
প্রথমত, আপনি খাবার প্রস্তুত করে একটি নির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণ করতে পারেন। অথবা প্রস্তুতকৃত খাবারগুলো বিতরণ করে আয় করতে পারেন। আরও জানুন কিভাবে ব্লগ থেকে ইনকাম করে ব্যবসার জন্য অর্থ সংগ্রহ করা যায়।
১৩। ফলের দোকান
শহর কিংবা গ্রামে, ফলের চাহিদা সর্বত্রই অত্যন্ত বেশি। বাজারে একটি দোকান স্থাপন করে ফলের ব্যবসা করা লাভজনক হবে, এছাড়াও বিভিন্ন বাস স্ট্যান্ড ও লঞ্চ ঘাটের নিকটবর্তী স্থানে ফলের ব্যবসা পরিচালনা করাও লাভজনক।
১৪। সিঙ্গারা সচুমার হোটেল
যদি আপনি গ্রামের ব্যবসার জন্য ১০ হাজার টাকার একটি আইডিয়া খুঁজছেন, তবে সিঙ্গারা সচুমার হোটেল একটি চমৎকার উদ্যোগ হতে পারে। কারণ এখানে দোকান ভাড়ার খরচ তুলনামূলকভাবে কম এবং এই ধরনের খাবারের চাহিদা ব্যাপক।
১৫। কার্ড ছাপানোর দোকান
এই ব্যবসা পরিচালনার জন্য আপনার অবশ্যই একটি কম্পিউটার এবং প্রিন্টার মেশিন থাকতে হবে। যদি আপনার কাছে এই যন্ত্রপাতি না থাকে, তবে ১০ হাজার টাকার মধ্যে কার্ড ছাপানোর ব্যবসা শুরু করা সম্ভব নয়। তবে যদি আপনার কাছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকে, তাহলে ১০ হাজার টাকায় সহজেই একটি কার্ড বানানোর দোকান খুলতে পারেন। ভিজিটিং কার্ড থেকে শুরু করে বিয়ের কার্ড তৈরি পর্যন্ত এই ব্যবসায়ে অনেক ধরনের অর্ডার পাওয়া যায়।
১৬। লন্ড্রি ও ক্লিনিং সেবা
নির্দিষ্ট কলোনি বা এলাকা কেন্দ্র করে সেখানে লন্ড্রি সেবা প্রদান করা সম্ভব। এর জন্য একটি দোকান ভাড়া নেওয়া এবং লন্ড্রি করার জন্য একটি আয়রন প্রয়োজন হবে। এছাড়াও, আয়রন করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরি করতে ১০ হাজার টাকার মতো খরচ হবে।
১৭। পেপার ব্যাগ বা ঠোঙ্গা উৎপাদন
ফল কেনার সময় যে ঠোঙ্গা দেওয়া হয়, সেই ঠোঙ্গা তৈরি করে বিক্রি করেও উপার্জন করা সম্ভব। এই ব্যবসায়ে বিনিয়োগের জন্য খুব বেশি মূলধনের প্রয়োজন নেই এবং কাঁচামাল হিসেবে কাগজ, আঠা ও কর্মী থাকলেই ব্যবসাটি শুরু করা যেতে পারে।
১৮। ফাস্ট ফুডের দোকান
ফাস্ট ফুড – এটি কার না পছন্দ? বর্তমান প্রজন্মের প্রিয় খাবারগুলো পাওয়া যায় এমন একটি স্থান হলো ফাস্টফুডের দোকান। এই চাহিদার ভিত্তিতে অনেক ফাস্ট ফুডের দোকান গড়ে উঠছে। সঠিক এলাকা এবং খাবারের মানের উপর নির্ভর করে ব্যবসার সফলতা।
শেষ কথা
পরিশেষে, এই ছিল ১০ হাজার টাকায় ২৫টি ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে একটি নিবন্ধ। এখান থেকে আপনি আপনার জন্য উপযুক্ত ব্যবসাটি নির্বাচন করে স্বাধীন পেশায় প্রবেশ করতে পারবেন।
ব্যবসা শুরু করার আগে সেই ব্যবসার বিষয়ে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন করা আবশ্যক। অন্যথায়, ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এই ক্ষেত্রে, লেখক কোনোভাবে ক্ষতির জন্য দায়ী হবেন না।